ইরান এবং অন্য প্রধান শক্তির সঙ্গে আলোচনার পূর্বে তেহরানের চাপের কারণে ২০১৫ পরমাণু চুক্তির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাড়তি কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না। স্থানীয় সময় শুক্রবার হোয়াইট হাউসের বরাত দিয়ে রয়টার্স এই খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে কে সর্বপ্রথম পদক্ষেপ নিবে তা নিয়ে ওয়াশিংটন এবং তেহরান দ্বিধায় রয়েছে। ইরান বলছে, চুক্তিতে ফিরতে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত সর্বপ্রথম সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা। অন্যদিকে ওয়াশিংটন বলছে, তেহরানের সর্বপ্রথম চুক্তি সম্পর্কিত সব আদেশ পালন করা উচিত।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইরােেনর পরমাণু অস্ত্র তৈরি প্রতিরোধ করতে উভয় দেশের চুক্তিতে ফিরতে তারা ইরানের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুত। প্রায় তিন বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেয়।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত দূত রিচার্ড মিলস বলেন, সেপ্টেম্বরে তেহরানের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের জোর করে আরোপ করা জাতিসংঘের সকল নিষেধাজ্ঞা যুক্তরাষ্ট্র বাতিল করছে। তেহরান নিষেধাজ্ঞা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এমন ইঙ্গিতের স্থির জবাব দিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা তোলা হলে ইরান পরমাণু কর্মসূচি পরিবর্তন করবে।’
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মিশিগানে যাওয়ার পর হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বিমানবলে জানান, কূটনৈতিক আলোচনার জন্য ইরানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা নেই।
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি অনুসারে, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইরান তাদের পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করতে রাজী হয়। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৮ সালে চুক্তি প্রত্যাহার করে নেন এবং ইরানের ওপর পুনরায় অবরোধ আরোপ করেন। এর পাল্টা জবাবে ইরান পরমাণু সীমিতকরণ চুক্তির কিছু শর্ত ভঙ্গ করে।
পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে বাইডেন প্রশাসন কোনো নির্বাহী আদেশ জারির কথা ভাবছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইরানের সঙ্গে প্রধান ছয় শক্তি-যুক্তরাজ্য, চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আর সাধারণত এরকম নিমন্ত্রণের পর আলোচনা, কূটনৈতিক আলোচনা হয়। আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য আমাদের অতিরিক্ত প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজন নেই।’
শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, ইরান চুক্তির বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সকল অংশীদারদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক আয়োজনের জন্য কাজ করছে।